Header Ads

Header ADS

‘সন্ত্রাস নির্মূলে চাই আইনি পদক্ষেপ’



ন্ত্রাস এক ধরনের সামাজিক ব্যাধি। একে কোন মতেই আত্মরক্ষার কৌশল বলা যায় না। যা আস্তে আস্তে শুরু হয়। একে যথা সময়ে নিরাময় করা না গেলে মারাত্মক ব্যাধিতে পরিণত হয়। এক সময় সন্ত্রাস শব্দটি শুধুমাত্র শিক্ষাঙ্গনে সীমাবদ্ধ ছিল, বর্তমানে তা ব্যবসা বাণিজ্য, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদে জন্ম লাভ করেছে। ব্যক্তির আচার আচরণ, চালচলন বেশ-ভূষা দেখে যে কোন ব্যক্তি সহজে অনুমান করতে পারে লোকটি সন্ত্রাসী। সন্ত্রাস মূলত ব্যক্তির কর্ম তৎপরতার বাহ্যিক পরিচিতি। এক কথায় জোরপূর্বক, ভয়ভীতি দেখিয়ে বা অন্য কোন বিশেষ পদ্ধতিতে কাউকে কোন কিছু করা, বা না করতে বাধ্য করে নিজের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করাই সন্ত্রাস। 
“আইনের আশ্রয় লাভ এবং আইন অনুযায়ী ব্যবহার লাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষত আইন অনুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না, যাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।” আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, দেশ দখল, রাষ্ট্র দখল করতে নতুন নতুন সন্ত্রাসবাদের জন্ম হচ্ছে। ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক মারণাস্ত্র। সন্ত্রাসের ভিন্ন কৌশল হিসেবে বর্তমানে কম্পিউটার, ইন্টারনেটেও এর সম্প্রসারণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আইন দিয়ে সব ধরনের সন্ত্রাস মোকাবেলার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে আইন কখনো নিজ থেকে কাউকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না বরং একজন নাগরিককে, তার আইনগত অধিকার লাভে এগিয়ে আসতে হয়। কোন নাগরিক তার মৌলিক অধিকার ক্ষুণœ হলে সংবিধান অনুযায়ী সরাসরি হাইকোর্টে প্রতিকারের ব্যবস্থা, কোম্পানির ক্ষেত্রে কোম্পানি আইন, প্রশাসনের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল, শ্রমিকদের ক্ষেত্রে শ্রম আইনে প্রতিকারসহ সব ধরনের ব্যবস্থা প্রচলিত আইনে রয়েছে। সচেতন নাগরিকই আইন থেকে সুবিধা পায়, অজ্ঞরা নয়। একজন নাগরিক, তিনি ছাত্র হোক বা কর্মজীবী হোক বা শ্রমজীবী হোক তার প্রতিটি আইনগত অধিকার আমাদের সংবিধানে স্বীকৃত। তবে আইনের প্রয়োগে ভিন্নতা রয়েছে। আমাদের দেশে সাধারণত দুই ধরনের আইনের প্রয়োগ সচরাচর লক্ষ্য করা যায়, অপরাধমূলক কর্মকান্ডের এবং উক্ত আইন প্রয়োগের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধি। এছাড়া, লেনদেন, ব্যবসা বাণিজ্য, জায়গা জমিসহ সব ধরনের কার্যক্রমের প্রতিকার আছে দেওয়ানি কার্যবিধিতে। এছাড়াও ব্যক্তির অবস্থান, অপরাধের ধরন ও গভীরতার ওপর আইনের প্রয়োগে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সাধারণত দুই ধরনের অপরাধের জন্ম দেয়- ১. অআমল যোগ্য অপরাধ ২. আমল যোগ্য অপরাধ। সাধারণত এই দুই ধরনের কর্মকান্ডের দ্বারা একজন সাধারণ নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই অপরাধের ধরনের ওপর তার প্রতিকারের ব্যবস্থা নির্ভর করে। যে কোন ধরনের হুমকি, ধমকি, ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ যে কোন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের আশঙ্কা থাকলে প্রতিকার হিসাবে প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট স্মারকলিপির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানাতে হবে, কারণ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আইনে এবং প্রতিষ্ঠানের কিছু বিধান থাকে। ২. থানায় জিডি (জেনারেল ডায়েরি) করতে হবে। জেনারেল ডায়েরি (এ.উ.): ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৫৪ ও ১৫৫ ধারা এবং ১৮৬১ সনের পুলিশ আইনের ৪৪ ধারা মতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রতিনিয়ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে ৬৫ নম্বর ফরমে প্রতিনিয়ত সব ধরনের ঘটনার সাধারণ ডায়েরি সংরক্ষণ করেন। কোথাও কোন ঘটনা সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা, বা কোন ব্যক্তি বা দল কর্তৃক হুমকি লাভ করার সাথে সাথে জিডি করার প্রয়োজন হয়েছে। থানার পুলিশ কর্মকর্তা জিডি থানায় নির্ধারিত ফরমে পূরণ করলেও সাধারণ নাগারিকের যে কোন তথ্য বা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুকূলে যে কোন আবেদন বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি লিখে জমা দিয়ে ডিউটিরত ব্যক্তি উক্ত আবেদনে জিডি নম্বর দিয়ে আবেদনকারীকে এক কপি ফেরৎ দিলে তা জিডি হিসাবে গণ্য হবে। এই সাধারণ ডায়েরি (জিডি) যে কোন ঘটনার অন্যতম সাক্ষ্য হিসাবে গণ্য হবে। জিডিতে কোন সন্ত্রাসীর নাম, ঠিকানা উল্লেখ করতে না পারলেও ঘটনার তারিখ, স্থান, সময় অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
অপরাধ দমনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে। যদি অপরাধ নীরবে সহ্য করা হয় তা হলে অপরাধীকে উৎসাহিত করার নামান্তর। মনে রাখতে হবে আমাদের দেশের প্রচলিত আইনে বিচারের প্রক্রিয়া ধীর গতি এবং সময় সাপেক্ষ, সে জন্য আইনগত পদক্ষেপ নিতে অনীহা নয়, বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে বাদির ভূমিকাও মুখ্য এ কথাও মনে রাখতে হবে। এর জন্য সচেতন বাদি/বিচার প্রার্থী সন্ত্রাস বা অপরাধ দমনে অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। সচেতন বিচার প্রার্থী সন্ত্রাস দমনে অনেক বেশি কার্যকরী শক্তি।
                                                           
লেখক : সাব্বির আহমেদ, (সাংবাদিক ও কলামিষ্ট)
                                             

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.